তন্ময় দত্ত মিশুর দুটি কবিতা
এক.
The Time You See
You are killing people.
You are throwing them away
From their own land.
You claim you are a child of the true God!
And you want peace.
You want peace so that you can live,
Live a very very good life.
So that you can marry, have children
So that you can have a better future for them.
And your philosophy will pass throughout generations.
You will be remembered as a Hero.
You are saving people.
You are giving them hope to live.
You are inspiring them not to leave home.
Have patient, fight back
Be a man and stand still.
You have no food, no water,
Nowhere to go.
You are a man of honor
You see God in others.
You live in fear,
Fear of losing people you love.
All the philosophy of the world
Remains in a cave.
One day, one year, a hundred years
You live, you live, you never-ever die.
The conflict goes on and on
It's always, You Vs. You
You lose and You win
You die and You live
You are cruel,
You are decent.
You are a murderer,
You spread love.
You can do it all!
Are you God?
I doubt that can't be.
Then who is God?
The time you see.
দুই.
পরিশুদ্ধ
কবিতায় কবিরা যেভাবে বলে,
আসলে কি দুনিয়া সেভাবেই চলে!
লাল ফুল কি ফোঁটে রোজ বাগানে?
নীল শাড়ি পরে রূপা কি দাঁড়িয়ে থাকে?
হিমু আসবে বলে, ভালোবাসবে বলে!
আমি দিশেহারা পথিক,
চাই কবিতার মত বাঁচতে।
আমায় দেখিয়ে দাও আলো,
আমি ছুটে চলি ঐ পথে।
সুকান্ত, নজরুল, রবি ঠাকুর, মাইকেল কি জানে?
একবিংশ শতকে আসবে এক যুবক,
প্রশ্নবিদ্ধ করবে তাদের সৃষ্টিকে!
বেঁচে থাকার কথা বলে যারা,
তারা কি আদৌও জানে বেঁচে থাকতে!
নদীর খরস্রোত, বৃক্ষের বৃদ্ধি,
বইয়ের পাতা উল্টোলেই কি জীবন পায় পরিতৃপ্তি?
কোথায় বিদ্রোহী, কোথায় সে-বনলতা,
বিদ্রোহ আর প্রেম কি কখনো একসূত্রে থাকে গাঁথা!
কোথায় কাকাবাবু, শ্রীকান্তই-বা কোথায়,
কমলাকান্ত বা ফেলুদা কি পারবে কখনও
দাঁড়াতে আমার সামনে!
ইতিহাসের পর ইতিহাস আছে রচিত,
বলো আমায় তা জীবন্ত না মৃত!
আমি দেখছি না সেনালি কাবিন, দেখছি না স্বাধীনতা।
আমার বুক চিড়ে কি তাহলে বেরুবে তাজা রক্ত
সেই রক্তে স্নান করে কি এই জাতি হবে পরিশুদ্ধ!
তন্ময় দত্ত মিশু
শিক্ষার্থী, ইংরেজি বিভাগ, ২০১৮-১৯
তাসনোভিয়ার ওপারে | অর্ণব আইচ
শুভ্র চোখে আকাশ মাপছে তরুণী।
জীর্ণ বসন ছাপিয়ে তীব্র মুখের হাসি।
সাগর পাড়ে দাঁড়িয়ে গুনছে,
ঠিক কতো যোজন পথ পেরোলে
পৌঁছতে পারবে ওরা।
পৌঁছবে তাসনোভিয়ার ওপারে।
সে চিনতো না কষ্ট, জানতো না দুঃখ কী।
সে ছিলো তার কল্পনাতেই সুখী।
তার কোলের মেয়েটাও ছিলো তেমনই।
শুভ্র। কোমল।
ওরা মানতো, ওরা জানে সুখ কী।
অসম্ভব কিছু? কেন?
পরাধীন মানুষ কি স্বাধীনতা চেনে না?
স্বচক্ষে ঈশ্বর না দেখেও কি আস্তিক হইনি?
সে আধ-খাওয়া পাউরুটি দেখেছে,
কতকাল বাষ্পে মোড়ানো ভাত দেখেনি।
রাত দেখেছে ঠিকই,
কখনও সোজা চোখে চাঁদ দেখেনি।
এখানে ভালোবাসা রোগ বিরল ছিলো।
ভালো লাগাই মহামারী।
উত্তেজিত আঁচড়ের বন্যতা পেয়েছে সে,
চুমুর উষ্ণতা কতটা জানেনি।
তার স্বপ্ন ছিলো।
কোনো এক দেবতা এসে,
একদিন তার মেঘবতী ছোট্ট মেয়েকে নিয়ে যাবে।
নিয়ে যাবে তাসনোভিয়ার ওপারে।
যেখানে সুস্থ হাসির বাড়াবাড়ি।
শুধু মহামারীর অভাব।
হাতের ইশারায় সূর্যের ডুবে যাওয়া
থেমে যায় যেখানে।
তাসনোভিয়ার ওপারে।
সেখানে তার শিশুকেও ঈশ্বরী হিসেবে উপাসনা করতে ইচ্ছুক হবে সবাই।
কূটনীতির জন্যে নয়। তার নিষ্পাপত্বের জন্যে।
তরুণীকে বলেছিলো তার মা,
সেখানে কেউ কাঁদে না।
কেউ আচমকা এসে পাঁজরে লাথি কষায় না।
গায়ের উপরে চড়তে চায় না।
বিশ্বাস হয়নি তরুণীর। মারমুখী মানুষ ছাড়া সেখানকার রাজ্য চলে কীভাবে?
হয়তো-বা সেখানেও পিঠ ঠিকই পুড়বে। তবে পোড়া পিঠে একদল এসে ওষুধ লাগিয়ে যাবে।
তাও-বা কম কী?
উন্মত্ততাও হয়তো শালীনতার পোশাক পায় সেখানে।
তাসনোভিয়ার ওপারে।
নেই কোনো ভুল হাসি, কোনো ধূলিশাখা কারো মুখে।
তাসনোভিয়ার ওপারে।
তার স্বপ্ন ছিলো তার ছোট্ট মেয়ে সেখানটায় যাবে।
চিনবে কাশফুল কী।
জানবে গরম হাতে রাঁধা ভাতের উষ্ণতা কেমন। জানবে দেবতাদের ঘর দেখতে কেমন হয়।
সেখানে নাকি কোনো দ্রষ্টব্য দুঃখ নেই।
সবার হাতে শস্যের থলে
আর টানটান গালের চামড়া।
ইরানি রাজবালিকার মতোন জীবন হয় সবার।
সব ঘাস সবুজ। সব যুবক বিবেকের দাস।
সরল মানুষের পোতাশ্রয় সেদেশ।
সেখানে ভালোলাগা রোগ বিরল।
ভালোবাসাই মহামারী।
সে চেয়েছিলো তার মেয়ে সেখানটায় যাক।
সে চেয়েছিলো শুধু হাসিটুকু ছাড়া তার থেকে যেন উত্তরাধিকারসূত্রে আর কিছুই না পায় মেয়েটা।
ওরা মানতো, ওরা জানে সুখ কী।
শুধুমাত্র জ্যান্ত থাকাই সুখ?
না, ওরা তা মানেনি।
ওরা ঠিক করেছিলো ওরা মা-মেয়ে যাবে।
যাবে তাসনোভিয়ার ওপারে।
সমুদ্রও স্রোত কুড়োতে যায়। স্বপ্ন খেলা করে যেখানে।
ঈশ্বরের শিশুদের সাথে তার ছোট্ট মেয়েটাও খেলবে সেখানে।
সমুদ্র এসে প্রতি বিকেলবেলা বিশ্রাম নেয় যেখানে।
তাসনোভিয়ার ওপারে।
তাসনোভিয়ার ওপারে।
অর্ণব আইচ
শিক্ষার্থী, গণিত বিভাগ, ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষ
এসো সত্যের তরে | রাসেল হোসেন সাকিব
এসো প্রবুদ্ধ, এসো মহান
এসো এক হই, মানি ভগবান।
এসো শান্তির বাণী ছড়াই,
সত্য-শিব-সুন্দর গলায়।
এসো এক হই,
ইসরায়েলের সিটিজেনকে বলায়,
কোন দোষে,
নির্দোষ ফিলিস্তিনি মারে এই বেলায়?
এসো সত্যের হয়ে কথা কই
ভেঙেচুরে তছনছ করি মিথ্যার জয়।
এসো বাঁচি দ্রোহ, প্রেম, সাম্য ও মানবতার তরে,
দেশ-কাল-পাত্রের চেয়ে,
অসাম্প্রদায়িকতাকে রাখি শিরে।
যদি এত সাম্য পৃথিবীর কূলে ছড়ায়
কে তবে ঈর্ষা-রণ রটায় এই মহা বেলায়?
কে করে কারে নির্যাতন
আত্মচেতন স্থির যখন?
এসো জাগাই আদিম স্বাধীন প্রাণ;
আত্মা জাগিলে বিধাতা চান।
এই বেলায়, করি সুন্দরে ধ্যান
রাখি সত্যের তরে মন-প্রাণ।
রাসেল হোসেন সাকিব
শিক্ষার্থী, অর্থনীতি বিভাগ, ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষ
সখী ভালোবাসা কারে কয় | মিরাজুল হাসান আপন
আচ্ছা—
তুমি কি বলতে পারো, ভালোবাসা কী?
ভালোবাসি কি প্রেমিকের কোনো কূটকৌশল, কোন সুবিধাজনক চাল, যাতে ভর করে সে পৌঁছে যায় প্রেমিকার অন্তরঙ্গতার গহীন ভেতরে?
সঠিক জানি না আমি।
তবে মনে হয়, ভালোবাসা বুঝি দুর্ভিক্ষ–দুর্ভিক্ষে বেঁচে যাওয়া একটা রুটি।
স্বৈরাচারী শাসকের অপরিসীম লুটপাটে যখন দেশে দুর্ভিক্ষ—ঠিক তখন ক্ষুধার মহাসমুদ্রে ছোট্ট ডিঙ্গি নৌকার মতো আমার কাছে একটা রুটি এবং তুমি আর আমি সমান পর্যায়ে ক্ষুধার্ত। এবার দুজনে ভাগাভাগি করে রুটি খাওয়া কিংবা প্রয়োজনে নিজের অংশটুকু তোমার পাতে তুলে দেওয়াকে কি ভালোবাসা বলে না?
মিরাজুল হাসান আপন
শিক্ষার্থী, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগ, ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষ
প্রিয়তমা | তানিম মুশফিক
প্রিয়তমা,
এখানে যুদ্ধ চলছে,
আমি একটা বাফার জোনে আছি,
বাফার জোন তোমাকে কীভাবে বুঝাই–,
বাফার জোন হচ্ছে, দুইটা হাঙর যেভাবে পুটি মাছকে ধ্বংসে লিপ্ত হয়।
যেভাবে তুরস্ককে দেখে এসেছি,
অথবা বেলজিয়াম।
প্রিয়তমা,
যেখানে যুদ্ধ চলছে এ শহর ভীষণ সুন্দর শহর,
সমুদ্র তীরবর্তী শহর, জলপাই গাছের শহর, রাসুলের মিরাজের শহর।
প্রিয়তমা,
এখানে ঘৃণার আগুন জ্বলছে আমেরিকা-ইরানের।
আমি দেখতে পাচ্ছি লাশের মিছিল,
আমি দেখতে পাচ্ছি শিশুর কান্না,
আমি দেখতে পাচ্ছি বাবার কান্না,
আমি দেখতে পাচ্ছি মায়ের আর্তনাদ,
আমি দেখতে পাচ্ছি ক্ষুধার্ত শিশু,
আমি দেখতে পাচ্ছি মানুষের মৃত্যু,
আমি দেখতে পাচ্ছি মৃত্যুটা তোমার,
আমি দেখতে পাচ্ছি মৃত্যুটা আমার।
প্রিয়তমা,
কেন এমন হচ্ছে?
এর জন্য তোমার জানতে হবে ক্ষমতার আগুনে পোড়ার ইতিহাস।
যে আগুনে পুড়েছে ইরাক,
যে আগুনে পুড়েছে আফগানিস্তান,
যে আগুনে পুড়েছে ভিয়েতনাম,
যে আগুনে পুড়েছে সিরিয়া,
যে আগুনে পুড়েছে ইয়েমেন,
এখন তুমি জিজ্ঞেস করতে পারো, কেন এমন হচ্ছে?
ক্ষমতাসীনরা কী করছে?
আমি বলব,কিছুই করছে না।
জাতিসংঘ বসে থেকে হাততালি দিচ্ছে,
হাততালি দিচ্ছে রাশিয়া,
হাততালি দিচ্ছে আমেরিকা,
হাততালি দিচ্ছে চীন,
হাততালি দিচ্ছে জাপান।
প্রিয়তমা,
আমি এক ব্যার্থ মানুষ।
মানুষের মৃত্যু দেখছি,
মানুষের অভাব দেখছি,
মানুষের পিপাসা দেখছি,
মানুষের ক্ষুধার্ত মুখ দেখছি,
মানুষের বাড়ি ধ্বংস হওয়া দেখছি,
একদল শিশুর কান্না উদযাপন করছে,
একদল শিশুর চিৎকার উদযাপন করছে,
একদল শিশুর মৃত্যু উদযাপন করছে,
আমি তোমাকে চিঠি লিখছি,
কারণ আমার বন্দুক নেই,
কারণ আমার ক্ষমতা নেই,
আমার মুখ বন্ধ,
আমার চোখ অন্ধ,
আমি কানে শুনছি না,
আমার কথা বলার ক্ষমতা নেই,
তাই আমি লিখছি।
প্রিয়তমা,
আমার লেখাটা মানুষের কাছে পৌঁছে দিও...
তানিম মুশফিক
শিক্ষার্থী, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগ, ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষ
আমি বইয়ের মাঝে শুনি | ছাবেকুন নাহার
আমি বইয়ের মাঝে শুনি নিরব শব্দগুলির চিৎকার,
শুনি অজস্র লেখকের প্রতিবাদী কর্কশ কণ্ঠধ্বনি,
মিশে যাই বইয়ের মাঝে বন্দি বর্ণগুলির মিছিলে,
শুনি অজস্র কবিতার কলকল ঢেউয়ের প্রতিধ্বনি।
শুনি নজরুলের বিদ্রোহী বাণী,
রবীন্দ্রনাথের গীতাঞ্জলির সুর,
জসীম উদ্দীনের পল্লিগীতি, আহ কী সুমধুর!
শুনি কামিনী রায়ের সুখ সন্ধানের বাণী,
বেগম রোকেয়ার নারী জাগরণের নির্মল আহ্বান,
সুফিয়া কামালের কবিতার কথা–আজও চির অম্লান।
আমি বইয়ের মাঝে শুনি ইতিহাসের কত গল্প গাঁথা,
শুনি যুগে যুগে বঞ্চিত মানুষগুলির কষ্টের কথা,
শুনি হাজারো পুলকিত হৃদয়ের স্পন্দন,
কানে ভেসে আসে শত ভগ্ন হৃদয়ের ক্রন্দন।
ছাবেকুন নাহার,
শিক্ষার্থী, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগ, ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষ
রুহ মুক্তির সময় ভাবলে
খোদারে পাইছি জন্মসূত্রে,
তোমারে পাওনের কোন সূত্র?
না জানিলাম যাপিত জনমে।
কোন এবাদত তোমারে পাওনের?
কোন মাধ্যমে গেলে
কোন কিতাবের হরফে
কোন বাহকের বার্তায়
লুকায় আছে তোমাতে পৌঁছানোর পথ?
আমারে জানাও তুমি, হাতজোড় করি
মেহেরবানি তোমার–।
খোদারে চেনাইতে যেমন রাসূল
পথের মাধ্যম দেহাইতে কুরআন
পাইতে হইলে ইমান লাগে,
তোমারে পাইবো কেমনে বলো
কোন বিশ্বাসে গেলে?
কোন ভ্রষ্টতায় আছি?
দরকারি কোন মোহমুক্তি?
আমারে জানাও তুমি
পথ দেহাও
মুক্ত কর
মেহেরবান তোমার, হাতজোড় করি।
এম এমরান উল্লাহ
শিক্ষার্থী, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগ, ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষ
আমি অসত্যের প্রতিবাদী।
উমরের বেগে ছুটি আমি,
আলির মত শক্তি;
আমি আবু বকরের তীক্ষ্মবুদ্ধি,
উসমানের দানকৃত সম্পত্তি।
রণক্ষেত্রে খালিদের খোলা তরবারি,
আমি অসত্যের তীব্র প্রতিবাদী।
আমি সম্ভবনাময় কবি,
ধার করা জ্ঞানে আলো ছড়াই।
তাতেও যদি একটু সুখ পাই।
আমি গোছালো না, অগোছালো,
আমি শিল্পী তবে বেসুরো,
কখনও বাজাইনি তো বেহালা।
আমি জীবনানন্দের মত–
বনলতার সৌন্দর্য লিখতে পারি না।
দু’মুঠো না পাওয়া,
সারা পৃথিবী যাদের ঘুমের ঘর,
তাদের আর্তনাদ তো শুনতে পারি!
পাশে দাঁড়াতে আমি পারি না,
তাই দাঁড়াইয় আমার প্রতিবাদী কলমের কালি।
প্রতিবাদের ভাষা যে,
চায়না ভাষার চেয়েও কঠিন;
আমি সে ভাষা শিখতে চাই!
অত্যাচারীর মুখোমুখি একবার আমি হতে চাই।
আমি নবজাতকের মুষ্টিবদ্ধ বিপ্লবের প্রতীক।
এসেছিলাম, এসেছি, আসবই!
এসেছি আমি রুশ, রেঁনেসা, ফরাসিতে,
এসেছি কৈবর্ত, কৃষক, ফরায়েজিতে।
হ্যাঁ! ঠিকই শুনেছো,
আমি ওয়েলিংটনের ওয়াটারলু।
বাবরের পানিপথ;
আমি শত্রুর সাথে করি সন্ধি,
তবুও আসুক প্রশান্তি, শান্ত হোক মন্থরে মন্থরে,
হায় রে! তবুও হেরে গেছি পলাশীর প্রান্তরে।
আমার চেতনা যেন ঘুমের পক্ষী,
রাখা আছে ল্যুভ মিউজিয়ামে;
তবুও আমি সজাগ হই,
কালের বিবর্তনে, সময়ের ব্যবধানে।
আমি অরপিয়াস-হ্যামোলিনের সুরেলা বাঁশি নই।
আমি নজরুলের বিষের বাঁশি;
সে-বাঁশির সুরে বাজাই আমি, গণমানবের তুলি।
লাঞ্ছিত, বঞ্চিত, পদতলে নিষ্পেষিত,
জনমানবের কষ্ট আমি;
সেই কষ্টগুলো কবিতায় জমা করি,
কারন আমি প্রতিবাদী।
অল্প শোকে হই আমি কাতর,
আর অধিক শোকে পাথর।
এতকিছুর মাঝেও জিতেছি অনেকবার!
আমার সব বিজয় বিংশ শতাব্দিতে,
জিতেছি আমি চুয়ান্ন সত্তরে,
আর জিতেছি সাতচল্লিশ-একাত্তরে,
যার নিমিত্তে সংগ্রাম আমার, ষিষট্টি-ঊনসত্তরে।
আমার ক্রোধ ঘূর্ণিঝড় ফনীর ন্যায়।
উড়িয়ে দিই সবকিছু,
যার শক্তি প্রেরণায় শতসাগর।
আমার স্বপ্ন এভারেস্টের সমান,
যার দ্রষ্টা আমার মা;
আমি সেইটা জয় করবোই।
আমি তো বিদ্রোহী কবিতার ঝাঁঝাল শব্দ।
আমি মেঘনাদবধের মধুসূদন,
কমলাকান্তের চন্দ্রশেখর,
জসীম উদ্দীনের ‘নকশী কাঁথা মাঠ’ আর কবর।
আমি শরতের শ্রীকান্ত-দেবদাস।
ইলিয়াসের খোয়াব-সেপাই,
আমি বাংলা সাহিত্যের আব্দুল হাই;
আমি সুনীলের উত্তরাধিকার,
সুকান্তের ছাড়পত্র,
মহাদেব সাহার এক কোটি বছর তোমাকে দেখি না।
আমি কায়কোবাদের মহাশ্মশান,
আমি নিখোঁজ হওয়া জহির রায়হান;
আমি দীনবন্ধুর নীলদর্পণ,
তাই আমি জাগত রই চাতক পাখির মতন ৷
সুজন মিয়া
শিক্ষার্থী, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগ, ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষ
আমরা একসাথে বৃদ্ধ হবো।
শানুদেশে থাকবে আমাদের একটি ছোট্টঘর,
যেখানে রাত হলে মোমবাতির আলোতে প্রজ্জ্বলিত হবে,
জীবনের গল্প।
আমাদের বন্ধন, মমতা ও ভালোবাসাকে,
মৃত্যুও অতিক্রম করতে পারবে না।
তুমি ভোর হলে আমার মাথায় আঙুলের চিরুনি চালিয়ে,
তেলওয়াত করবে সূরা আর-রহমানের ‘ফাবি আইয়ি আলা ইরাব্বিকু মা তুকাজ্জিবান।’
এবং আমাকে অদৃশ্য কিছু বাক্য পড়ে,
মাথার ফুঁ দিবে–
যে ফুঁ-এর বদৌলতে আমার দৌড় আজ এতটুকু।
আমরা একসাথে গল্প বাঁধব আবার–
বোমারু বিমান গুলি যখন জলপাই গাছের নিশানা নিয়ে,
আমাদের ঐক্যের আহ্বান করবে,
মরুভূমির ট্যাংকের নল থেকে যেদিন বেরিয়ে আসবে সহিংসতার পরিবর্তে ‘তালা'য়াল বাদরু আলাইনা,’
যেদিন জেরুজালেমের আকসায় অবতরণ করবে মাসিহ-উল-ঈসাহ,
আমরা সেদিন মিলিত হবো সবুজ পোশাক পরে সপ্তাকাশের পাখি হয়ে।
আমরা দেখব একসাথে সম্প্রীতি ও ইনসাফের নসিহাহ।
আমাদের স্বপ্ন একটাই–
সত্যের মিছিল আমাদেরকে যে পুরস্কার দেবার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে,
তা অর্জন করা।
আমাদের প্রেম একটাই,
নমরুদের বিরুদ্ধে কন্দরের প্রতিটি কোণায় বিদ্রোহ তৈরি করা ও বিপ্লব আনা।
আমরা একসাথে বৃদ্ধ হবো–
তোমার উদরের পবিত্রতা রক্ষা করে,
জীবনকে জয় করে,
আহার করব মান্না সালওয়া ও হাউজে কাউসারের প্রতিশ্রুতিপূর্ণ পানি।
তারপর শাড়ির আঁচলে মুখ মুছে লুকিয়ে পড়ব তোমার থেকে,
যাতে তুমি আমার প্রতি ভালোবাসার বিরক্ত প্রকাশ করো।
আমরা একসাথে মিলিত হবো,
বিজয়ের মাঠে আমরা একসাথে মিলিত হয়ে,
হেরা গুহায় নাযিল হওয়া সংবিধানের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করব।
সেদিন আমি তোমার পবিত্র কোলে মাথা রেখে ঘুমাব,
এবং তুমি আঙুলের চিরুনি দিয়ে মাথায় বিনি কেটে তেলওয়াত করবে সূরা ফাতাহ।
সাজ্জাদ হোছাইন সাকিব
শিক্ষার্থী, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগ, ২০২১-২০২২ শিক্ষাবর্ষ
0 Comments